শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে আশুরহাট গ্রামে অবস্থিত এই পাখির গ্রাম
শৈলকুপা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে আশুরহাট গ্রাম অবস্থিত। আর দশটি গ্রামের মত অতি সাধারণ একটি গ্রাম। শৈলকুপা উপজেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে আশুরহাট গ্রামটি পাখির গ্রাম নামে পরিচিত।
২০০৭ সালের শীতকালে এক ঝাঁক পারিযায়ী পাখি উপজেলার শামুক খোল গ্রামের একটি শিমুল গাছে আশ্রয় নেয়। ভোরে পাখিরা আহার সংগ্রহে বের হতো। সন্ধ্যার আগে আবার ফিরে ওই শিমুল গাছে রাত কাটাতো। শীত শেষে তারা চলে যায়। পরের বছর ফের এসে সেই শিমুল গাছেই আশ্রয় নেয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত পাখিরা আশুরহাট গ্রামে আসা-যাওয়া করতে থাকে। ২০১৩ সালে আসার পর পাখিরা শীত শেষে ফিরে যায় না। ওই শিমুল গাছে স্থায়ীভাবে বাসা বেঁধে বসবাস শুরু করে। বাসায় ডিম পাড়ে। দ্রুত বংশ বিস্তার হয়। ছয় বছরে পাখির সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে গেছে। শিমুল গাছ ছাড়াও আশ-পাশের অনেক গাছে বাসা বেঁধে বসবাস করছে। কিন্তু গ্রামে বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায় তখনই যখন ওই গ্রামে আসতে শুরু করে অতিথি পাখি। শীত আসলেই হাজার হাজার পাখি এসে আশ্রয় নেয় এই এলাকার গাছপালায়। কিচিরমিচির আওয়াজে মুখরিত হয় পুরো গ্রাম। লম্বা ঠোঁটের বগ আকৃতির এসব পাখিদের স্থানীয়রা শামুকভাঙ্গা বলে ডাকে। হাজার হাজার মাইল পাড়ী দিয়ে তারা আসে এই গ্রামে। প্রথম দিকে পাখিগুলো শীতের কয়েক মাস এখানে অবস্থান করে শীত শেষে আবার নিজ গন্তব্যে ফিরে যেত। কিন্তু গত ২-৩ বছর যাবৎ দলের কিছু অংশ ফিরে গেলেও অধিকাংশ পাখি এখানে সারা বছর থেকে যায়। খড়কুটো এনে শিমূল গাছসহ আশপাশের কয়েকটি গাছে বাসা বাধেঁ। ডিম পেড়ে বাচ্চা তুলে বংশ বৃদ্ধি শুরু করে। অল্প দিনেই গ্রামটি পাখির অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। বর্তমানে অতিথি পাখির সংখ্যা আনুমানিক ৬-৭ হাজার। গ্রামে শুধু অতিথি পাখিই নয় বিকেল হলে ডোবা-নালা ঘিরে বসে শালিক, ঘুঘু, বকসহ ৪-৫ হাজার দেশীয় পাখি। পাখিদের অবস্থানে অপরূপ সৌন্দর্যে ভরে উঠেছে চারিদিক। এ সৌন্দর্য অবলকনে ছুটে আসে দুর-দরন্তের মানুষ।
কিভাবে যাওয়া যায়:শৈলকুপা থেকে ভ্যাট, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ইত্যাদিযোগে ৩০ মিনিটে আশুরহাট পৌঁছানো সম্ভব।
No comments:
Post a Comment