সকলকে ঝিনাইদহ ইনফো সাইটে স্বাগতম জানাচ্ছি। এই সাইটে আমরা ঝিনাইদহের ইতিহাস,ঐতিহ্য আপলোড করবো। ঝিনাইদহ জেলার ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভ্রমন কাহিনী আপনিও দিতে পারেন। আমরা আপনার নামসহ এই সাইটে প্রকাশ করবো। আপনার লেখা আমরা প্রত্যাশা করছি। ইমেইল করুন: jhenaidahinfo@gmail.com

Wednesday, October 25, 2023

এক নজরে মহেশপুর উপজেলা

 মহেশপুর উপজেলা (ঝিনাইদহ জেলা)  আয়তন: ৪১৭.৮৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৩´ থেকে ২৩°২৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪২´ থেকে ৮৯°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে জীবননগর এবং কোটচাঁদপুর উপজেলা, দক্ষিণে চৌগাছা উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পূর্বে চৌগাছা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।জনসংখ্যা ৩৩২৫১৪; পুরুষ ১৬৬২৯১, মহিলা ১৬৬২২৩। মুসলিম ৩১৯৫৭৬, হিন্দু ১২৭৫৯, খ্রিস্টান ৬৪, বৌদ্ধ ২ এবং অন্যান্য ১১৩।জলাশয় প্রধান নদী: ইছামতি, কোদলা, বেতনা. ভৈরব। উখড়ি বিল, বড় বিল, ডুবলি বিল, কাঠগাড়ার বিল, পূর্বপাড়ার বিল উল্লেখযোগ্য।প্রশাসন মহেশপুর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।



প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বুড়ো শিব (মহেশ্বর) মন্দির, রাজবল্লভ মন্দির, সুন্দরপুর জমিদার বাড়ি, খালিশপুরের নীলকুঠি, ভালাই শাহের মাযার ও শ্রীপাট মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ উপজেলার হুশোরখালি, বাবুর বাগান, উজ্জলপুর, যাদবপুর, দত্তনগর ও পুড়োপাড়া নামক স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। হুশোরখালির লড়াইয়ে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং দু’জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন ও একজন পাকসেনাদের হাতে বন্দী হন। দত্তনগরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন এবং কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলায় ১টি বধ্যভূমি রয়েছে, মহেশপুর হাইস্কুল মাঠে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন মহেশপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৫০, মন্দির ৩০। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মহেশপুর জামে মসজিদ, শিব মন্দির, শ্রীপাট মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.৮%; পুরুষ ৪৫.৭%, মহিলা ৪৩.৮%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২৩, মাদ্রাসা ২৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৫), মহেশপুর হাইস্কুল (১৮৬৩), খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৬৯), মহেশপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭৬), বৈচিতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৯২২), নটিমা সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৭৪)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সীমান্ত বাণী (সাপ্তাহিক), চেতনা, ক্ষণকাল (সাময়িকী)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, সিনেমা হল ৩, ক্লাব ২৫, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ৫, প্রেসক্লাব ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.৭৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৯%, ব্যবসা ১২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২৬%, চাকরি ২.৭১%, নির্মাণ ০.৫৮%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৮% এবং অন্যান্য ৪.৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৬৪%, ভূমিহীন ৪২.৩৬%। শহরে ৪৫.২২% এবং গ্রামে ৫৮.৬৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, তুলা, পাট, বাদাম, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, খেসারি, ছোলা, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, পেঁপে, নারিকেল, জামরুল, তরমুজ, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ২১, হাঁস-মুরগি ৪৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৫২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৯০ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৫২১ কিমি; রেলপথ ১৬ কিমি।

শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, কাঠ ও বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৩, মেলা ৩। খালিশপুর, পুড়াপাড়া, তালসা, শ্যামকুড়, জিন্নানগর, ভৈরবা, সামন্তা ও বেলেমাঠ। ফতেহপুরের বৈশাখী মেলা এবং মহেশপুরের দুর্গাপুজার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  শাকসবজি, কলা, কাঁঠাল, খেজুর গুড়, আলু।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৬.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৭%, ট্যাপ ১.২% এবং অন্যান্য ২.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫২.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪০.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১১, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৬, ক্লিনিক ৮, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা  কেন্দ্র ১,  ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পাহাড়ী ঢলে এই অঞ্চল প্লাবিত হয়ে কাঁচা ও আধা-পাকা ঘরবাড়ি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, সৃজনী, জাগরণী চক্র। [নাসির উদ্দিন]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  মহেশপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।

No comments:

Post a Comment