সকলকে ঝিনাইদহ ইনফো সাইটে স্বাগতম জানাচ্ছি। এই সাইটে আমরা ঝিনাইদহের ইতিহাস,ঐতিহ্য আপলোড করবো। ঝিনাইদহ জেলার ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভ্রমন কাহিনী আপনিও দিতে পারেন। আমরা আপনার নামসহ এই সাইটে প্রকাশ করবো। আপনার লেখা আমরা প্রত্যাশা করছি। ইমেইল করুন: jhenaidahinfo@gmail.com

Friday, August 31, 2018

ঝিনাইদহের মহেশপুরে কৃতিমান ব্যক্তিত্ব / Famous personalities of Moheshpur


ঝিনাইদহের মহেশপুরে কৃতিমান ব্যক্তিত্ব / Famous personalities of Moheshpur

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় বেশ কয়েকজন কৃত্তিমান ছিলেন। এর মধ্যে

পিবি মার্টিনঃ ১৮৬৯-১৮৮০ খৃষ্টাব্দ।
বিপিন বিহারী বিশ্বাসঃ ১৮৮০-১৮৮৮ খৃষ্টাব্দ।
স্বরজিৎ চন্দ্র রায় চৌধুরীঃ ১৮৮৮-১৮৯৮ খৃষ্টাব্দ।
অবনিশ চন্দ্র রয় চৌধুরীঃ ১৯৯৮-১৯০৬ খৃষ্টাব্দ।
প্রফুল্ল চন্দ্র রায় চৌধুরীঃ
জিতেন্দ্র নাথ মুখার্জিঃ ১৯১৩-১৯৩০ খৃষ্টাব্দ।
ক্ষিরোদ গোপাল রায় চৌধুরীঃ ১৯৩০-১৯৪১ খৃষ্টাব্দ।
পঞ্চানন বন্দোপাধ্যায়ঃ ১৯৪১-১৯৪৭ খৃষ্টাব্দ। 
এদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে ক্লিক করুন:



পিবি মার্টিনঃ ১৮৬৯-১৮৮০ খৃষ্টাব্দ।
ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ কারী পিবি মার্টিন ভারতীয় প্রশাসন বিভাগের উপসচিব পদে থাকা অবস্থায় নদীয়া জেলার জেলা প্রশাসক নিযুক্ত হন। উল্লেখ্য সে সময় মহেশপুর থানা বনগ্রাম মহকুমার অর্ন্তগত নদীয়া জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। (পরবর্তীতে ১৯০০ খৃষ্টাব্দে নদীয়া জেলার হতে বনগ্রাম মহকুমা যশোর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়)। জেলার প্রশাসক হিসাবে তিনি মহেশপুর পৌরসভার মেয়র নিযুক্ত হন। তিনি মহেশপুর পৌরসভার মেয়র নিযুক্ত হন। তিনি ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে হতে ১৮৮০ খুষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

বিপিন বিহারী বিশ্বাসঃ ১৮৮০-১৮৮৮ খৃষ্টাব্দ।
বিপিন বিহারী বিশ্বাস মহেশপুর এক সম্ভ্রান্ত কায়স্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি মহেশপুর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এনট্রান্স পাশ করে কলকাতায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি মহেশপুর পৌরসভার প্রথম বাঙালী মেয়র ছিলেন। তিনি কলকাতার জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবারে রাজ এস্ট্রটের শাহজাদপুর মফস্থলের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি একজন সাহিত্যিক ছিলেন। হরিষে বিষাদ নামে তার একটি উপন্যাস তৎকালীন সময়ে বিশাল নাম করে ছিল। তিনি ১৯৮০ হতে ১৯৮৮ খ্রষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

স্বরজিৎ চন্দ্র রায় চৌধুরীঃ ১৮৮৮-১৮৯৮ খৃষ্টাব্দ।
স্বরজিৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী মহেশপুর এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সংগীত শাস্ত্রে পন্ডিত ছিলেন। তিনি স্বদেশী আন্দোলনের নের্তত্ব দেন। মহাত্মাগান্ধীর নেতৃত্বে তিনি বিলেতী পণ্য বর্জনের জন্য মহেশপুরে আন্দোলন করেছিলেন। তারই নেতৃত্বে সে সময়ে বিলেতি চিনি ও কাপড় বিক্রি মহেশপুরে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ হয়েছিল। স্বরজিৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী ঐ সময় কোটচাঁদপুর হতে গুড়ের চিনি ও স্থানীয় নওদাগ্রাম, বৈচিতলায় উৎপাদিত কাপড় আমদানী করে মহেশপুরের ব্যবসায়ীদের দেশীয় পন্য বিক্রয়ে সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি ১৮৮৮ হতে ১৮৯৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

অবনিশ চন্দ্র রয় চৌধুরীঃ ১৯৯৮-১৯০৬ খৃষ্টাব্দ।
অবনিশ চন্দ্র রয় চৌধুরী মহেশপুরে সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবার রায় চৌধুরী বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিও একজন স্বদেশী আন্দোলনের নেতা ছিলেন। মহাত্মাগান্ধীর নেতৃত্বে তিনি স্বদেশী আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি একজন বিখ্যাত শিকারী ছিলেন। সে সময় স্বাপদ সংকুল বনভূমিতে নানা প্রকার হিংস্র প্রাণীর বসবাস ছিল। এই সকল হিংস্র প্রাণী লোকালয়ে ঢুকে মানুষ এবং গৃহপালিত পশুদের ক্ষতি করত। অবনিশ চন্দ্র রায় চৌধুরী সে সময়ে বাঘ শুকর প্রভৃতি হিংস্র বন্য প্রাণী শিকার করে উক্ত প্রাণীদের হাত থেকে মানুষদের রক্ষা করতেন। তিনিও একজন নামকার সংগীত শিল্পী ছিলেন। ১৮৯৮ হতে ১৯০৬ সাল পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

প্রফুল্ল চন্দ্র রায় চৌধুরীঃ
প্রফুল্ল চন্দ্র রায় চৌধুরী মহেশপুর জমিদার বংশে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সে সময় একজন নামকরা সমাজ সেবক ছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। তিনি তার নিজের অর্থ ব্যয়ে তার বাড়ীতে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। তিনি ১৯০৬ হতে ১৯৯৩ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

জিতেন্দ্র নাথ মুখার্জিঃ ১৯১৩-১৯৩০ খৃষ্টাব্দ।
বিখ্যাত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ও মাতিলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠ রাচনৈতিক সহযোগী জিতেন্দ্র নাথ মুখার্জী মহেশপুরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় র্কগ্রেসের সদস্য থাকার সয় মহেশপুরে বহু জাতীয় কংগ্রেস নেতার পদার্পন হয়েছিণ। কথিত আছে, তারই নেতৃত্বে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ও মাতিলাল নেহরু মেহশপুর রাজনৈতিক জনসভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে গ্রাজুয়েশান ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি যশোর জেলা কংগ্রেস ও মহেশপুর থানা কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। তিনি নামকরা সংগীত বিশারদ ছিলেন। উচ্চাংগ সংগীতে তিনি বিশাল পারদর্শী ছিলেন। কৎকালীন কলকাতায় তিনি বহু সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি ১৯৯৩ হতে ১৯৩০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

ক্ষিরোদ গোপাল রায় চৌধুরীঃ ১৯৩০-১৯৪১ খৃষ্টাব্দ।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ক্ষিরোদ গোপাল রায় চৌধুরী মহেশপুরর সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি মহেশপুর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এন্ট্রাল পাশ করেন। পরে কলকাতা হতে এফ এ (আই এ) পাশ করেন এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,এ ডিগ্রী লাভ করেন। একই সাথে তিনি বিটি (ব্যাচেলর অফ টিচিং) ডিগ্রী লাভ করেন। কর্মজীবনে ক্ষিরোদ গোপাল রায় চৌধুরী মহেশপুর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয় ও চৌগাছা ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি একজন যশোস্বী শিক্ষক ছিলেন। তার বহু ছাত্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশাল অবদান রাখেন। তিনি ১৯৩০ হতে ১৯৪১ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।

পঞ্চানন বন্দোপাধ্যায়ঃ ১৯৪১-১৯৪৭ খৃষ্টাব্দ।
পঞ্চানন বন্দোপাধ্যায় আনুমানিক ১৯০৬ খৃষ্টাব্দে মহেশপুর এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে মহেশপুর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৪১ হতে ১৯৪৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মহেশপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন।


No comments:

Post a Comment