সকলকে ঝিনাইদহ ইনফো সাইটে স্বাগতম জানাচ্ছি। এই সাইটে আমরা ঝিনাইদহের ইতিহাস,ঐতিহ্য আপলোড করবো। ঝিনাইদহ জেলার ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভ্রমন কাহিনী আপনিও দিতে পারেন। আমরা আপনার নামসহ এই সাইটে প্রকাশ করবো। আপনার লেখা আমরা প্রত্যাশা করছি। ইমেইল করুন: jhenaidahinfo@gmail.com

Saturday, April 24, 2021

মহেশপুরে রশিদের সোনালি রঙের তরমুজ

আব্দুর রশিদ আপাদমস্তক কৃষক। শখ কৃষি ক্ষেত্রে নতুন নতুন সবজি, ফল ও ফসলের চাষ করা। আর এ শখের অংশ হলো দেশের যে কোনো প্রান্তে নতুন কোনো চাষের সংবাদ পেলে মাসে একদিন সময় করে সেখান থেকে ঘুরে আসা। এভাবেই তিনি তার চাষে সফলতা দেখিয়ে চলেছেন। সাথে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন নিজের পরিবারের।
আব্দুর রশিদ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যুগিহুদা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
মহেশপুর উপজেলা শহরের পাশ ঘেঁষে বেয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদের তীরে বেড়ে উঠা যুবক আব্দুর রশিদ ছাত্রজীবনে মেধার পরিচয় দিলেও লেখাপড়া তেমন একটা এগোয়নি। কর্মজীবনের শুরু থেকে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ও অন্যদের সহযোগিতায় কৃষিকাজ শুরু করেন। সব সময়ই তিনি তার চাষে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছেন।
বর্তমানে তার দুই বিঘা জমিতে সোনালি রঙের ‘তৃপ্তি’ নামে নতুন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। দশ রোজা থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন। স্থানীয় ও ঢাকার ব্যাপারিরা ক্ষেতে এসে তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন। এই দুই বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এখান থেকে খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে তার আশা। মাত্র দুই মাসে ভিন্ন জাতের এ তরমুজ চাষ দেখে অন্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
তরমুজের পাশাপাশি তার পাঁচ বিঘা জমিতে রয়েছে মাল্টা, কমলা লেবু ও আঙুরের চাষ। আঙুর চাষ এবারই প্রথম শুরু করেছেন। দশ কাঠা জমিতে ছমছম ও সুপার সনিকা জাতের ৭৫টি আঙুরের গাছ রোপণ করেছেন। পাশের দেশ ভারত ও ইটালি থেকে এসব চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি আশানুরূপ ফল পান তাহলে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ বছর এসব গাছ থেকে ফল পাবেন। তবে এখনো পর্যন্ত দেশে চাষ হওয়া আঙুরের স্বাদ ভালো না হলেও সফল এ কৃষকের আশা, তার আঙুর সুস্বাদু হবে।
এর আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্লাকবেরি (কালো রঙের) ও গোল্ডেন ক্রাউন (হলুদ রঙের) জাতের তরমুজ চাষ হতে দেখা গেছে। বর্তমানে সদর উপজেলায় চার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে এবং জেলায় এ আবাদ সাকুল্যে প্রায় ১৫ হেক্টর।
তরমুজচাষি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ইউটিউবে কৃষিকাজ সংক্রান্ত অনেক ভিডিও দেখতাম। এছাড়া বিভিন্ন কৃষকের মাধ্যমে খোঁজ রাখতাম কোথায় কোন চাষ হচ্ছে। নতুন কিছু মনে হলেই সেখানে ছুটে যেতাম। সেখান থেকে চাষ পদ্ধতি রপ্ত করে নিজে চাষ করতাম। এভাবে চলছে আমার চাষাবাদ।’
তিনি আরো জানান, জমিতে যে তরমুজ আছে তা প্রায় দুই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। তাতে লাভ হবে দেড় লাখ টাকার মতো।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অমিত বাগচী জানান, পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা ও বেলে দো-আঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য বেশি উপযোগী; যা ঝিনাইদহে বিদ্যমান। আর মান ভালো হওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এ জেলার তরমুজের চাহিদা রয়েছে অনেক। তাই এই চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা অমিত।

No comments:

Post a Comment