সকলকে ঝিনাইদহ ইনফো সাইটে স্বাগতম জানাচ্ছি। এই সাইটে আমরা ঝিনাইদহের ইতিহাস,ঐতিহ্য আপলোড করবো। ঝিনাইদহ জেলার ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভ্রমন কাহিনী আপনিও দিতে পারেন। আমরা আপনার নামসহ এই সাইটে প্রকাশ করবো। আপনার লেখা আমরা প্রত্যাশা করছি। ইমেইল করুন: jhenaidahinfo@gmail.com

Tuesday, December 9, 2025

কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিস নানাবিধ সংকটেও সেবা প্রত্যাশিদের আস্থা অর্জন


ঝিনাইদহের
কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমিমো. শাহিন আলম কর্মস্থলে যোগদনের এক বছর সাত মাসে ২১ হাজারের বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এরমধ্যে প্রায় ২০ হাজারের বেশি নামজারি এবং ১০ বছর পর্যন্ত ঝুলে থাকা এক হাজারের বেশি মিসকেস মামলা নিষ্পিত্তি করেছেন।

জনবল সংকট, সার্ভার জটিলতার মধ্যেও সেবাবান্ধব ব্যবহার, কাজের গতি, জবাবদিহীতা  স্বচ্ছতার মাধ্যমে এক বছরে উপজেলাবাসীর দৃষ্টিতে এসেছেন। সেপ্টেম্বর ২০২৪ নামজারি সূচকে কালীগঞ্জ খুলনা বিভাগে প্রথম স্থান (১৪ দিন গড় নিষ্পত্তি) অর্জন করেন। এছাড়াও মাদক নির্মূল, পরিবেশ রক্ষা, ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, মাটি কাটা প্রতিরোধ, মাছ সুরক্ষাসহ অপরাধ প্রতিরোধে শতাধিক মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন। সরকারি রাজস্ব আদায়, খাস, ভিপি জমির সুরক্ষা, হাট বাজার পেরিফেরিসহ সার্বিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে সাতটি পদ শূন্য থাকলেও মাত্র দুইজন অফিস সহকারী নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সরকরের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অফিসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন দালাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।

 

২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মো. শাহিন আলম যোগদান করেন। তার যোগদানের পর অফিসের চিত্র পাল্টে যায়। তিনি ৩৮ তম বিসিএস এর কর্মকর্তা। এসিল্যান্ড হিসেবে কালীগঞ্জ তার প্রথম কর্মস্থল।

 

নামজারি নিষ্পত্তির সরকার নির্ধারিত সময়সীমা ২৮ দিন এবং মিসকেস এর ক্ষেত্রে ৯০ দিন। ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এক হাজারের মত মিসকেস পেন্ডিং ছিল। এক বছরে সকল মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এসিল্যান্ড এর রুমসহ অফিসের প্রত্যেক রুমে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আগে শুধু বাইরে ক্যামেরা ছিল।

 

সেবার প্রদানে জবাবদিহীত নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং অন্যত্র বদলিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাবলিক টয়লেট সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, আইডি কার্ড প্রদান, রেকর্ড রুম সংস্কারসহ বিভিন্ন ভিজিল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

 

দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে সেবাগ্রহিতার ফোন নাম্বারসহ আবেদন শুনানীতে নিজেদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। তবে, বিষয়ে জনগণের ইতিবাচক সাড়া কম দেখা গেছে। একই সময়ে উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহ পরিদর্শন করে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অফিসে যাতে জনগণকে মিনিটের বেশি অপেক্ষা না করতে হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

কালীগঞ্জ কাশিপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম জানান, আমি একটি নামজারির আবেদন করেছিলাম। সরকার নির্ধারিত সময় ২৮ দিন হলে মাত্র ১৩ দিনে আমার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ফি নিয়ে অল্প সময়ে নামজারি আমার কাছে একেবারেই অকল্পনীয়। এর আগেও আমি আমার পরিবার একই ধরনের নামজারির আবেদন করে দুই থেকে চার মাস সময় লেগেছিল, সাথে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছিল।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা ৬নং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জহির রায়হান জানান, গত দেড় বছর আগে করা আমার একটি মিসকেস আবেদন ছিল। বর্তমান ভূমি অফিসার আসার পর আমার অভিযোগটি জানিয়েছিলাম। এরপর মাত্র ৪০ দিনে তা সম্পন্ন হয়েছে।

 

স্থানীয়রা বলছে একই অফিসে একটি মিসকেস শেষ হতে আগে থেকে ১০ বছর পর্যন্ত লেগে যেত। এখন দুই মাসের মধ্যে সরকার নির্দারিত ফিতে সে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মো. শাহিন আলম যোগদানের পর চিত্র পাল্টে গেছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহিন আলম বলেন, কালীগঞ্জকে ভূমি সেবার একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে যেতে চাই। ভূমি সেবাই স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ হয়রানি দূরীকরণ আমার প্রধান লক্ষ্য। জনগণের হয়রানি দূরীকরণ, অফিসের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দালালদের দ্বারস্থ না হয়ে নিজেদের ফোন নাম্বার দিয়ে আবেদন করা, শুনানীতে উপস্থিত হওয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ বিষয়ে সচেতন করতে কাজ করছি। তবে দুঃখের বিষয় জনগণের সচেতনতার অভাবে দাদালরা সুযোগ পাচ্ছে। সেবাগ্রহিতাসহ সাধারন মানুষের সহযোগীতা পেলে সেবার মান আরো বাড়বে বলে মনে করেন তরুণ ভূমি কর্মকর্তা।


No comments:

Post a Comment