প্রাচীন বারবাজার নগরী
বারোবাজার যে একটি অতি প্রাচীন জনপদ তাতে কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু কোন সময় নির্দেশক প্রমাণের অভাবে এ স্থানের সঠিক ইতিহাস নির্ধারণ করা
কষ্টকর। “বারোবাজারে প্রাচীন আমলের অসংখ্য কীর্তি আজও মহাকালের শত আঘাত বিপর্যয়ের
মধ্যে টিকে আছে। সাবেক আমলের প্রস্তর খন্ড ছড়িয়ে আছে লুপ্ত নগরীর বুকের উপর। “প্রাচীন
যুগের এই বর্ধিষ্ণু শহরটি কিভাবে ধবংসপ্রাপ্ত হয়েছিল তার কোন ইতিহাস নেই। তবে এখানকার
মাটিতে যে অজস্র নরকংকাল মিশে আছে, তাতে সহজেই অনুমিত হয়, এই শহরে ব্যাপকভাবে
মহামারী দেখা দিয়েছিল, নতুবা যুদ্ধের ভয়ংকর অভিশাপ নিয়ে অজস্র ঘোড়ার খুরে পদদলিত
করে ভেংগে চুরমার করে দিয়েছিল এই শহরটি কোন দ্বিগ্বীজয়ী; তা-কে জানে? বারোবাজার আজ
মৃতের নগরী।” কতকালের কত মানুষের ইতিহাস বুকে ধারণ করে আছে এই বারোবাজার। একদা
এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সুন্দর জনবহুল জনপদ। কালের বিবর্তনে আজ তার কোন চিহ্ন নেই।
এখানে ওখানে নরকংকালের ছড়াছড়ি, আর প্রাচীন কয়েকটি দীঘি। মহাকালের গর্ভে সবই বিলীন
হয়ে গেছে; শুধু সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছে সেকালের কীর্তিরাজি। বারোবাজার এলাকায় অসংখ্য
যে প্রাচীন কীর্তির ধ্বংসাবশেষ ছিলো,
সেসব কীর্তির মধ্য মাত্র অল্প কয়েকটি বর্তমান আছে। বাকীগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে
গেছে। কয়েক বর্গমাইল স্থান জুড়ে অসংখ্য প্রাচীন ইট ও মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ দেখা যায়।
পনের বিশ বছর আগেও এখানে যেসব কীর্তি ছিল বর্তমানে সেগুলো খুঁজে পাওয়া যায় না।
অবস্থান: ঝিনাইদহ > কালিগঞ্জ > বারবাজার / যশোর > সাতমাইল > বারবাজার।
ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে যে পিচঢালা রাজপথ সোজা চলে গেছে দক্ষিণে যশোরের দিকে, এই
রাস্তার পার্শ্বে ঝিনাইদহ শহর থেকে সতেরো মাইল দূরত্বে বারোবাজার নাম ধারণ করে আজও
একটি গ্রাম্য বাজার পথিকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এখানে গেলে দেখা যাবে বেশ কিছু
প্রাচীন মসজিদ, মাজার ও দীঘি।
দুরত্ব: ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বর থেকে ১৭/১৮ কি: মি:। / যশোর শহর থেকে
প্রায় ১৫/১৬ কি: মি:।
যাতায়াতের মাধ্যম: ঝিনাইদহ
শহর হতে খুলনা-কুষ্টিয়া বাস সার্ভিসে যাওয়া যায়। / যশোর থেকেও একাই রাস্তায়
বারবাজার যাওয়া যায়। বারবাজার হতে একটি ভ্যান কয়েক ঘন্টার জন্য ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে
সবকিছু দেখা যায়।
তথ্যসুত্র: জেলা প্রশাসন ওয়েবসাইট ও যশোর ইনফো।
No comments:
Post a Comment